জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

গর্ভনিরােধক পদ্ধতি (Contraceptive methods)

সন্তানের জন্ম বিভিন্ন উপায়ে রােধ করা সম্ভব। বর্তমানে অনেক ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি আছে। পরিকল্পিত ও সুস্থ-সুন্দর পরিবার গড়ে তােলার জন্য প্রতিটি দম্পতিকেই জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে হবে এবং ভেবে-চিন্তে উপযুক্ত পদ্ধতিটি বেছে নিতে হবে। জন্মনিয়ন্ত্রনের বহুল ব্যবহৃত আধুনিক পদ্ধতিগুলাে হলাে-

অস্থায়ী পদ্ধতি স্বল্পমেয়াদী

বড়ি (Oral pill)-  মহিলাদের জন্য

কনডম (Condom) – পুরুষ ও মহিলাদের জন্য

ইনজেকশন (Injection)-মহিলাদের জন্য (তিন মাস মেয়াদী)।

ডায়াফ্রাম (Diaphram) মহিলাদের জন্য (৬ ঘণ্টা মেয়াদী)।

স্পঞ্জ (Sponge)-মহিলাদের জন্য (২৪ ঘণ্টা মেয়াদী)।

অস্থায়ী দীর্ঘমেয়াদী

 আই ইউ ডি (Intrauterine device-IUD)- মহিলাদের জন্য (দশ বছর মেয়াদী)

স্থায়ী পদ্ধতি

ভ্যাসেকটমি(Vasectomy)- ছুরিবিহীন ভ্যাসেকটমি (পুরুষদের জন্য)

টিউবেকটমি (Tubectomy)- লাইগেশন (মহিলাদের জন্য)।

জন্মনিয়ন্ত্রণের স্থায়ী ও অস্থায়ী পদ্ধতি গুলোর বিবরণ

অস্থায়ী পদ্ধতি (স্বল্পমেয়াদী)

বড়ি (Oral pill)

এটি বিভিন্ন অনুপাতে ইস্ট্রোজেন ও প্রােজেস্টেরন হরমােন মিশ্রণে তৈরি এবং মহিলাদের জন্য মুখে গ্রহণযােগ্য বড়ি । রজঃচক্রের ৫-২৫ তম দিন পর্যন্ত প্রতিদিন একটি করে বড়ি গ্রহণ করতে হয়। এটি একটি সর্বাধিক ব্যবহৃত জন্মনিরােধক পদ্ধতি কিন্তু অনেক মহিলার সাময়িক বমি বমি ভাব, ফোঁটা ফোঁটা স্রাব, উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধির মত উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

কনডম (Condom)

এটি পুরুষ ও মহিলাদের ব্যবহারের জন্য এক ধরনের পাতলা, লম্বাটে রবারের থলি।সঙ্গমের পূর্বে পুরুষের শিশ্নে বা মহিলার যােনিতে কনডমে আবৃত করে নিলে স্খলিত শুক্রাণু আর জরায়ুতে প্রবেশ করতে পারে না।

ইনজেকশন

মহিলাদের জন্য (তিন মাস মেয়াদী)। বেশ কয়েকমাস যাতে গর্ভধারণ ঝুঁকি নিরাপদে এড়ানাে যায় তার জন্য ইদানিং এক ধরনের ইনজেকশন আবিষ্কৃত হয়েছে। অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকায় এর গুণগত মান উন্নয়নের চেষ্টা চলছে।

ডায়ফ্রাম (Diaphram)

এটি মিলনের পূর্বে জেলি বা ফোম সহযােগে স্বাস্থ্যকর্মী বা চিকিৎসকের সহায়তায় মহিলাদের যােনিতে স্থাপন করতে হয় এবং যৌন মিলনের পর অন্তত ৬ ঘণ্টা সেখানেই রাখতে হয়। ডায়ফ্রাম ব্যবহারে কোন স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই, বরং জরায়ুর ক্যান্সার এবং যৌন রােগ প্রতিরােধে সহায়ক।

স্পঞ্জ (Sponge)

মহিলাদের জন্য (২৪ ঘন্টা মেয়াদী)। এটি ভিজিয়ে যােনিতে স্থাপন করতে হয় এবং পর মুহূর্ত থেকেই এর কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা অনবরত প্রতিরক্ষার কাজে নিয়ােজিত থাকে।

জন্ম নিয়ন্ত্রণের অস্থায়ী পদ্ধতি (দীর্ঘমেয়াদী)

অন্তঃজরায়ু গর্ভনিরােধক ব্যবস্থা (IUD )

এটি মহিলার জরায়ুর ভেতরে স্থাপনকৃত গর্ভনিরােধক পদ্ধতি যা IUD বা Intra Uterine Device নামে পরিচিত । এ ব্যবস্থায় পলিথিন, তামা, রূপা বা স্টেনলেস স্টিল নির্মিত একটি ফাঁস (Loop) জরায়ুর অভ্যন্তরে স্থাপন করলে তা জরায়ুর ভেতরে নিষিক্ত ডিম্বাণুর স্থাপনে বাঁধা দান করে। বাংলাদেশে শুধুমাত্র কপার-টি (Copper-T) ব্যবহার প্রচলিত।

জন্ম নিয়ন্ত্রণের স্থায়ী পদ্ধতি

ক) ভ্যাসেকটমি (Vasectomy)

এ পদ্ধতিতে পুরুষের ক্ষেত্রে উভয় দিকের শুক্রনালির অংশকে কেটে বেঁধে দেয়া হয় যাতে শুক্রাণু বাইরে আসতে না পারে।

খ) টিউবেকটমি (Tubectomy) বা লাইগেশন (ligation)

এ পদ্ধতিতে মহিলাদের ক্ষেত্রে উভয় দিকের ফেলােপিয়ান নালির অংশ কেটে বেঁধে দেয়া হয় যাতে শুক্রাণু প্রবেশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। অধিক সন্তানবতী বা যারা একেবারেই আর সন্তান চান না বা গর্ভধারণের জন্য শারীরিকভাবে অসুস্থ তাদের জন্য এ পদ্ধতি গ্রহণ করা প্রয়ােজন।

Leave a Comment