সেন্ট্রিওল
নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদে ও বহুকোষী প্রাণী কোষে নিউক্লিয়াসের কাছাকাছি দুটি বেলনাকার অথবা দন্ডাকার স্বপ্রজননক্ষম অঙ্গাণু থাকে। এদের সেন্ট্রিওল বলে।
অবস্থান
শৈবাল, ছত্রাক, ব্রায়ােফাইট, টেরিডােফাইট, জিমনােস্পার্ম প্রভৃতি এবং অধিকাংশ প্রাণীতে সেন্ট্রিয়াল পাওয়া যায়। প্রােক্যারিয়ােটিক কোষ, ডায়াটম, ঈস্ট ও অ্যানজিওস্পার্মে এটি অনুপস্থিত। সাধারণত নিউক্লিয়াসের কাছাকাছি এটি অবস্থান করে।
সংখ্যা
সেন্ট্রিওল সংখ্যায় এক জোড়া।
সেন্ট্রিওলের গঠন
সেন্ট্রিওল নলাকৃতির, প্রায় ০.২৫ মাইক্রোমিটার ব্যাস সম্পন্ন ও ৩.৭ মাইক্রোমিটার লম্বা। এরা দেখতে বেলনাকার, দু’মুখ খােলা পিপার ন্যায়।
প্রত্যেক সেন্ট্রিওল প্রধানত তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথা-
(ক) প্রাচীর বা সিলিন্ডার ওয়াল,
(খ) ত্রয়ী অণুনালিকা বা ট্রিপলেটস এবং
(গ) যােজক বা লিংকার ।
সেন্ট্রিয়াল প্রাচীর ৯টি ত্রয়ী অণুনালিকা দিয়ে গঠিত। প্রতিটি অণুনালিকা সমদূরত্বে অবস্থিত এবং প্রত্যেকে তিনটি করে উপনালিকা নিয়ে গঠিত। পরস্পর সংলগ্ন তিনটি উপনালিকাকে যথাক্রমে A, B এবং C নামে চিহ্নিত করা হয়। উপনালিকাগুলাে পার্শ্ববর্তী অণুনালিকার সঙ্গে এক ধরনের ঘন তন্তুর সাহায্যে যুক্ত থাকে। সেন্ট্রিয়েলের চারপাশে অবস্থিত গাঢ় তরলকে সেন্ট্রোস্ফিয়ার এবং সেন্ট্রোস্ফিয়ারসহ সেন্ট্রিয়েলকে সেন্ট্রোসােম বলে।
রাসায়নিক উপাদান
সেন্ট্রিয়েল প্রধানত প্রােটিন, লিপিড ও ATP নিয়ে গঠিত।
কাজ
১। কোষ বিভাজনের সময় ক্রোমােসােমের প্রান্তীয় গমনে সহায়তা করে।
২। কোষ বিভাজন-এর সময় মাকুতন্তু (Astral ray) গঠন করে।
৩। কোষ বিভাজন-এর সময় মেরু নির্দেশ করে।
৪। সিলিয়া ও ফ্ল্যাজেলাযুক্ত কোষে সিলিয়া ও ফ্ল্যাজেলা সৃষ্টি করে।৫। শুক্রাণুর লেজ গঠন করতে সহায়তা করে।